1. news@dainikchattogramerkhabor.com : Admin Admin : Admin Admin
  2. info@dainikchattogramerkhabor.com : admin :
বুধবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ০৪:১০ অপরাহ্ন
শিরোনামঃ
সিএমপি কমিশনারের ‘ওপেন হাউজ ডে’-তে সেবা নিলেন সেবাপ্রত্যাশী। নৌবাহিনীর জাহাজে দেশে ফিরল মায়ানমারে আটকে পড়া বাংলাদেশী নাগরিক। ইউনিক ফাউন্ডেশন’র কেন্দ্রীয় কমিটি গঠিত পটিয়াতে বর্ষবরণ উৎসব হাজারো মানুষের ঢল উৎসবমুখর বোয়ালখালী: নববর্ষে প্রশাসনের বর্ণিল আয়োজন নববর্ষ ১৪৩২: বোয়ালখালীতে বলি, গানে, নৃত্যে প্রাণের উৎসব চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের মাসিক কল্যাণ সভা অনুষ্ঠিত চট্টগ্রামে আইনজীবী আলিফ হত্যা মামলায় আরও ১১ জনকে গ্রেপ্তার দেখানোর আদেশ আনোয়ারায় ট্রাক-অটোরিক্সা সংঘর্ষে নিহত ১,যুবক আহত মুদি দোকানের আড়ালে মাদকের রমরমা ব্যবসা, ৯৪৯ পিস ইয়াবাসহ আটক দুই সহোদর

মুহাম্মদ (সা.) বিশ্ববাসীর জন্য রহমত -মাওলানা এম সোলাইমান কাসেমী 

  • সময় রবিবার, ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
  • ১৪৭ পঠিত

 

সর্বকালের ও সর্বযুগের শ্রেষ্ঠ মানুষ এবং নবিকুল শিরোমণি হজরত মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আগমন ছিল বিশ্ববাসীর জন্য রহমতস্বরূপ। বিশ্বনবীর আগমনে বিশ্ববাসীর আনন্দ। এ আনন্দ মুক্তির। এ আনন্দ স্বাধীনতার। এ আনন্দ মানবাধিকারের। এ আনন্দ সাম্য, মৈত্রী, ভ্রাতৃত্ব ও সমমর্যাদার। বিশ্ব যখন অন্যায়, অবিচার, জুলুম ও বহুবিধ কুসংস্কারে নিমজ্জিত ছিল, ঠিক তখনই আল্লাহ তাআলা হিদায়াতের আলোক প্রদীপরূপে পৃথিবীর বুকে পাঠিয়েছেন প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-কে। তিনি পৃথিবীর বুকে এমন এক সুসভ্য সমাজ প্রতিষ্ঠা করেন, যা সর্বাঙ্গসুন্দর ও সমুজ্জ্বল আলোক আভায় উদ্ভাসিত। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আর আমি প্রত্যেক উম্মতের মধ্যেই রাসুল পাঠিয়েছি, যাতে তোমরা আল্লাহর ইবাদত করো (কল্যাণ ও ন্যায়বিধান মেনে চলো) এবং তাগুত থেকে বেঁচে থাকো।’ (সুরা-১৬ নাহল, আয়াত: ৩৬)।

রবি অর্থ বসন্ত। আউয়াল মানে প্রথম। রবিউল আউয়াল হলো আরবের বসন্তের প্রথম মাস বা প্রথম বসন্ত। রবিউল আউয়াল আরবি হিজরি চান্দ্রমাসের তৃতীয় মাস। প্রকৃতি বসন্তকালে ফুলে-ফলে সুশোভিত হয়। নবজাগরণের সূচনা হয়। পরিবেশ ও প্রতিবেশ সুখের সমীরণে অবগাহন করে। আনন্দের সমুদ্রে আবেগের বান আসে। (লিসানুল আরব)।

রবিউল আউয়াল মাসে এই পৃথিবীতে শুভাগমন করেন মানবতার মুক্তিদূত সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব হজরত মুহাম্মদ (সা.)। এই মাসে তিনি প্রিয় জন্মভূমি মক্কা মুকাররমা থেকে মদিনা মুনাওয়ারায় হিজরত করেন। রবিউল আউয়াল মাসেই তিনি ইন্তেকাল করেন। (আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া)

রবিউল আউয়াল মাসের ১২ তারিখে হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর জন্ম।  এ দিনটি মিলাদুন্নবী (সা.) নামে প্রসিদ্ধি লাভ করে। মিলাদুন্নবী (সা.)-এর মূল শিক্ষা মহানবী (সা.)-এর ভালোবাসার, কঠোর সাধনার, দাঁতভাঙা, রক্তঝরা, পরিপূর্ণ ও একমাত্র গ্রহণযোগ্য ধর্ম বা জীবনবিধান ইসলামকে পূর্ণাঙ্গ রূপে সর্বস্তরে বাস্তবায়নের মাধ্যমে সব আল্লাহদ্রোহী শক্তিকে সম্পূর্ণভাবে পরাস্ত করে ইসলামকে সগৌরবে প্রতিষ্ঠা করা।

মিলাদুন্নবী (সা.)-এর অর্থ নবী (সা.)-এর জন্ম অনুষ্ঠান। ধীরে ধীরে এর সঙ্গে ‘ঈদ’ শব্দ যোগ হয়ে ‘ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.)’ রূপ লাভ করে। যার অর্থ মহানবী (সা.)-এর জন্মোৎসব। এ পর্যায়ে আরেকটি পরিভাষাও প্রচলিত হতে থাকে ‘সিরাতুন্নবী (সা.)’ অর্থাৎ নবী (সা.) জীবনচরিত বা জীবনী আলোচনা অনুষ্ঠান। এ দিবসে অনেকে জশনে জুলুশ বা শোভাযাত্রা ও আনন্দ র‍্যালিও করে থাকেন। মিলাদ শব্দের আভিধানিক অর্থ জন্মলগ্ন, জন্মক্ষণ, জন্ম সম্পর্কে আলোচনা। আমাদের পরিভাষায় মিলাদ বলতে বোঝায় প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর জন্ম ও জীবনী আলোচনা এবং তাঁর প্রতি দরুদ ও সালাম পেশ করা। কোরআন করিমে রয়েছে, ‘নিশ্চয় আল্লাহ তায়ালা তাঁর রাসুল (সা.)-এর প্রতি রহমত বর্ষণ করেন, ফেরেশতাগণ তাঁর জন্য দোয়া করেন; হে বিশ্বাসীগণ তোমরা তাঁর প্রতি দরুদ পাঠ ও যথাযথরূপে সালাম পেশ করো।’ (সুরা-৩৩ আহজাব, আয়াত: ৫৬)।

মিলাদুন্নবী (সা.)-এর মূল শিক্ষা কালেমা তাইয়্যেবা ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মদুর রাসুলুল্লাহ’ (আল্লাহ ছাড়া মাবুদ নেই, মুহাম্মদ (সা.) তাঁর প্রেরিত রাসুল)। কালেমার নিগূঢ় অর্থ হাজারো প্রকারে বিশ্লেষণ করা যায়। এর মধ্যে সবচেয়ে পূর্ণাঙ্গ অথচ অতি সংক্ষিপ্ত ও অতি নিখুঁত বিশ্লেষণ হলো, ‘বিশ্বপ্রভু আল্লাহর প্রতি আমি ইমান আনলাম, তাঁর সব আদেশ-নিষেধ মেনে নিলাম।’ (ইমানে মুজমাল) । মিলাদুন্নবী (সা.)-এর মূল শিক্ষা মহানবী (সা.)-এর ভালোবাসার, কঠোর সাধনার, দাঁতভাঙা, রক্তঝরা, পরিপূর্ণ ও একমাত্র গ্রহণযোগ্য ধর্ম বা জীবনবিধান ইসলামকে পূর্ণাঙ্গ রূপে সর্বস্তরে বাস্তবায়নের মাধ্যমে সব আল্লাহদ্রোহী শক্তিকে সম্পূর্ণভাবে পরাস্ত করে ইসলামকে সগৌরবে প্রতিষ্ঠা করা। এটাই নবী-রাসুল প্রেরণের আসল উদ্দেশ্য। পবিত্র কোরআনে বিবৃত হয়েছে, ‘তিনি সে মহান প্রভু, যিনি রাসুল প্রেরণ করেছেন, সঠিক পন্থা ও সত্য ধর্মসহযোগে; যাতে সে ধর্মকে বিজয়ী করতে পারেন সর্বধর্মের শিখরে, যদিও কাফির-মুশরিকেরা তা অপছন্দ করে।’ (সুরা-৯ তাওবা, আয়াত: ৩৩; সুরা-৬১ ছফ, আয়াত: ৯)।

আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর পথ অনুসরণ করতে হবে। অর্থাৎ রাসুলুল্লাহ (সা.) যা যা করতে বলেছেন, তা করতে হবে, আর যা করতে বারণ করেছেন, তা বর্জন করতে হবে। এ প্রসঙ্গে পবিত্র কোরআনের ঘোষণা, ‘রাসুল (সাধারণ) তোমাদের যা দেন, তা তোমরা গ্রহণ করো এবং যা থেকে তোমাদের জন্য নিষিদ্ধ করেছেন, তা থেকে বিরত থাকো।’ (সুরা: রও হাশর, আয়াত: ৭) । রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর ভালোবাসা ইমানের পূর্বশর্ত। ভালোবাসা প্রকাশ পায় নির্দেশ পালন ও অনুকরণের মধ্যে। কোরআন মাজিদে বলা হয়েছে, ‘(হে রাসুল সা.!) বলুন, যদি তোমরা আল্লাহকে ভালোবাসতে চাও, তবে আমার অনুসরণ করো; (তাহলে) আল্লাহ তোমাদের ভালোবাসবেন।’ (সুরা-৩ আলে ইমরান, আয়াত: ৩১)। প্রিয় নবীজি হজরত মুহাম্মদ (সা.) বলেন, ‘তোমরা কেউ ততক্ষণ পর্যন্ত পূর্ণাঙ্গ মুমিন হবে না, যতক্ষণ না আমি তার কাছে তার পিতা-পুত্র ও যাবতীয় সবকিছুর চেয়ে প্রিয় হব।’ (বুখারি: ১৩ ও ১৪)। অশান্ত বিশ্বকে শান্তির ছায়াতলে আনতে হলে চাই বিশ্বনবির আদর্শ অনুসরণ। নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আদর্শ ও শিক্ষা অনুসরণের ফলেই আমরা পেতে পারি মহান আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি। কেননা এর মাঝেই রয়েছে সর্বপ্রকার কল্যাণ।

লেখক:

মাওলানা এম সোলাইমান কাসেমী

পিএইচডি গবেষক

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।

খবরটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
কপিরাইট © ২০২০ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
ওয়েবসাইট ডিজাইন: ইয়োলো হোস্ট