নিজস্ব প্রতিনিধিঃ
চাকরি দেওয়ার প্রলোভনে দেখিয়ে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার মামলায় রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) এক কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে রাজশাহী নগরের মালোপাড়া এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর শুক্রবার সকাল সোয়া ৯টার দিকে তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
গ্রেপ্তার ব্যক্তির নাম মানিকুজ্জামান মানিক। তিনি রুয়েটের সহকারী পরিচালক (অর্থ ও হিসাব)। এই মামলার আরেক আসামি রাজশাহীর হার্ডওয়ার ব্যবসায়ী মুনরুজ্জামান মুন, তিনি মানিকুজ্জামানের বড় ভাই। তাকেও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
সম্প্রতি নগরের রাণীনগর সাধুর মোড় এলাকার তামান্না ইয়াসমিন নামের এক নারী মানিক ও তার ভাই মুনের বিরুদ্ধে এই মামলা করেন। রুয়েটে চাকরি দেওয়ার আশ্বাসে মানিক ও তার ভাই মুনকে তামান্না ইয়াসমিন ২০২২ সালের ৯ মার্চ ৪ লাখ ও ১৬ মার্চ ১ লাখ টাকা দেন। এরপর দীর্ঘদিন অতিবাহিত হলেও তারা চাকরি দিতে পারেননি। টাকাও ফেরত দেননি। তাই ভুক্তভোগী ওই নারী মামলা করেন। ওই মামলায় গ্রেপ্তার করে মানিককে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
মানিকুজ্জামান মানিকের বিরুদ্ধে শুধু চাকরি দেওয়ার নামে প্রতারণা নয়, ব্যক্তিগত প্রয়োজনে এবং জমির বায়না নিয়ে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগও রয়েছে। এসব অভিযোগ নিয়ে ভুক্তভোগীরা গত ১৬ মার্চ সংবাদ সম্মেলন করেছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে মাহাবুবুর রহমান সঞ্জু, শাহি, নওবাহার খাতুন, তামান্না ইয়াসমিন, আশরাফ উজ জামান ও মামুনুর রশিদ অভিযোগ করেন, তাদের কাছ থেকে এই দুই ভাই মোট ১৮ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনের খবর গণমাধ্যমে প্রকাশ হলে, অভিযুক্ত দুই ভাই ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন এবং পাওনাদারদের হুমকি দিতে থাকেন। পরবর্তীতে গত ২৮ মার্চ ভুক্তভোগী তামান্না ইয়াসমিন মামলা করেন।
মানিকুজ্জামান মানিককে গ্রেপ্তারের খবর ছড়িয়ে পড়লে আরো দুজন ভুক্তভোগী থানায় গিয়ে হাজির হন। এ সময় রানীনগর পানির ট্যাংক এলাকার সালমা কবির নামের এক নারী অভিযোগ করেন, তার মেয়ে ফাহমিদা আক্তার রিমিকে রুয়েটে চাকুরী দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে ৪ বছর আগে মানিক ও তার ভাই মুন ১০ লাখ ৩০ হাজার টাকা নিয়ে আত্মসাত করেছেন।
আরেক ভুক্তভোগী জেসমিন আরা দাবি করেন, তার স্বামী সুইটকে রুয়েটে চাকরি দেওয়ার নাম করে ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা নিয়েছেন মানিক ও তার ভাই মুন। এ দুই ভুক্তভোগী বোয়ালিয়া থানায় তাদের বিরুদ্ধে আলাদা দুটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।
নগরের বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাক হাসান বলেন, মানিককে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। মামলার অন্য আসামিকেও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। তাদের বিরুদ্ধে আরো যেসব অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে সে বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Leave a Reply