মোহাম্মদ মনির ইসলাম রিয়াদ
স্টাফ রিপোর্টার:
চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দির মৃত্যু ঘিরে সৃষ্টি হয়েছে ধুম্রজাল। নিহত কয়েদির গায়ে আঘাতের চিহ্ন থাকার ও বিস্তর অভিযোগ উঠেছে কারা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। এদিকে কারা কর্তৃপক্ষের দাবি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে সজীবের মৃত্যু হয়েছে।
শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) দুপুর ১২টার দিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চমেক পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আলাউদ্দিন তালুকদার।
নিহত ফারজাত হোসেন সজীব (৩৬) নগরীর বকশিরহাট (পোস্ট অফিস)এলাকার বাসিন্দা মো. রফিকের ছেলে। তাদের গ্রামের বাড়ি কুমিল্লা জেলায়।
স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে,সজীব একটি ট্রান্সপোর্টে চাকরি করতেন গত ২৬ মার্চ রাতে কোতোয়ালী থানা পুলিশের অভিযানে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরদিন তাকে ডাকাতির প্রস্তুতির মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।
সজীবের স্ত্রী লাকি আক্তার অভিযোগ করে বলেন, “বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কারাগার থেকে ফোনে জানানো হয়, সজীব মারামারিতে আহত হয়েছেন এবং দ্রুত চিকিৎসার জন্য ২০ হাজার টাকা নিয়ে যেতে বলা হয়। কিছুক্ষণ পর আবার জানানো হয়, তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেলে নেওয়া হয়েছে। হাসপাতালে গিয়ে দেখি, তার মরদেহ পড়ে আছে। এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। আমাদের দুটি ছোট সন্তান রয়েছে। এখন আমাদের অবলম্বনও নেই।”
নিহতের চাচা আবু তালেব বলেন, সজীব কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত ছিল না। সে বকশিরহাট এলাকায় আড্ডা দেওয়ার সময় টহল পুলিশ তাকে আটক করে। পরে কোতোয়ালী থানায় নিয়ে যাওয়া হয় এবং ডাকাতির প্রস্তুতির মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার ইকবাল হোসেন বলেন, “সজীব ২৭ মার্চ থেকে কারাগারের যমুনা ভবনের সাত নম্বর ওয়ার্ডে ছিলেন। শুক্রবার সকালে বুকে ব্যথার কথা জানালে তাকে চমেক হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরিবারের অভিযোগের পর যমুনা ভবনের সাত নম্বর সেলে তদন্ত চালানো হয়েছে, তবে কোনো মারামারির ঘটনা বা প্রমাণ মেলেনি। অসুস্থ অবস্থায় সজীব নিজেই হেঁটে কারা হাসপাতাল এবং সেখান থেকে গাড়িতে চমেক হাসপাতালে যান। গাড়ি থেকে নেমেও তিনি হেঁটেই হাসপাতালে প্রবেশ করেন।”
এ ঘটনায় তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছে কারা কর্তৃপক্ষ।
Leave a Reply