মোঃ মনিরুল ইসলাম রিয়াদ
স্টাফ রিপোর্টারঃ
চট্টগ্রামে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যা মামলায় তার ভাইয়ের করা মামলায় ১১ জনকে গ্রেপ্তার দেখানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) চট্টগ্রামের ষষ্ঠ মহানগর ম্যাজিস্ট্রেট এস এম আলাউদ্দিন মাহমুদের আদালত শুনানি শেষে এই আদেশ দেন।
চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর মোহাম্মদ রায়হানুল ওয়াজেদ চৌধুরী জানান, এই ১১ জন আসামি আলিফ হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে আগে থেকেই কারাগারে আছেন।
আলিফের ভাইয়ের করা ভাঙচুর ও বিস্ফোরক আইনের মামলায় তাদের আজ গ্রেপ্তার দেখানোর আদেশ দেওয়া হয়েছে।
এই আসামিরা হলেন— প্রেমনন্দন দাশ বুজা (১৯), রনব দাশ (২৪), বিধান দাশ (২৯), বিকাশ দাশ (২৪), রুমিত দাশ (৩০), রাজ কাপুর (৫৫), সামির দাশ (২৫), শিব কুমার দাশ (২৩), ওম দাশ (২৬), অজয় দাশ (৩০) এবং দেবী চরণ (৩৬)।
শুনানির আগে আসামিদের কড়া নিরাপত্তায় কারাগার থেকে চট্টগ্রাম আদালতে আনা হয়। শুনানি শেষে তাদের পুলিশ প্রহরায় কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
এর আগে গত ১০ এপ্রিল এই ১১ আসামির জামিন আবেদন শুনানি শেষে চট্টগ্রামের এডিশনাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সরকার হাসান শাহরিয়ারের আদালত তাদের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
গত ৩ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রামের আরেকটি আদালত ২৬ নভেম্বর পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে করা মামলায় এই ১১ জনকে গ্রেপ্তার দেখানোর আদেশ দিয়েছিল।
২৬ নভেম্বর রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় চিন্ময় কৃষ্ণ ব্রহ্মচারীর জামিন নাকচ করে কারাগারে পাঠানোর পর চট্টগ্রাম আদালত প্রাঙ্গণে প্রিজন ভ্যান ঘিরে বিক্ষোভ করেন সনাতনী সম্প্রদায়ের লোকজন।
আড়াই ঘণ্টা পর পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে চিন্ময় দাশকে কারাগারে নিয়ে যায়।
বিক্ষোভকারীরা আদালত সড়কে রাখা মোটরসাইকেল ও যানবাহন ভাঙচুর করে। এরপর আদালতের সাধারণ আইনজীবী ও কর্মচারীরা মিলে তাদের ধাওয়া করে। ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার মধ্যে রঙ্গম কনভেনশন হল সড়কে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে হত্যা করা হয়।
এ ঘটনায় ২৯ নভেম্বর কোতোয়ালী থানায় আলিফের বাবা জামাল উদ্দিন একটি হত্যা মামলা করেন। মামলায় ৩১ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ১৫ থেকে ১৬ জনকে আসামি করা হয়।
আইনজীবীদের ওপর হামলা, বিস্ফোরণ ও ভাঙচুরের অভিযোগে আরেকটি মামলা করেন আলিফের ভাই খানে আলম, যেখানে আসামি করা হয় ১১৬ জনকে।
এর বাইরে আদালত এলাকায় সংঘর্ষ, ভাঙচুর ও পুলিশের কাজে বাধার ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে তিনটি মামলা করে। এসব মামলায় ৭৬ জনের নামসহ অজ্ঞাত ১,৪০০ জনকে আসামি করা হয়।
সবশেষ ৩ ডিসেম্বর মোহাম্মদ উল্লাহ নামে এক ব্যক্তি ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও আওয়ামী লীগ নেতাসহ ২৯ জনকে আসামি করে আরেকটি মামলা করেন।
গত ২৬ জানুয়ারি বান্ডেল সেবক কলোনি থেকে গ্রেপ্তারের পর আলিফ হত্যা মামলার আসামিদের প্রথমবার আদালতে হাজির করা হয়।
এ মামলায় এর আগে আরও ১০ জন আসামি গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। তারা হলেন— চন্দন দাস, আমান দাশ, রুমিত দাশ, নয়ন দাশ, গগন দাশ, বিশাল দাস, রাজীব ভট্টাচার্য্য, দুলর্ভ দাশ, সুমিত দাশ ও সনু মেথর।
সব মিলিয়ে আলিফ হত্যা মামলায় এজাহারে নাম থাকা ২১ জন আসামি এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার হয়েছেন।
গ্রেপ্তার আসামিদের মধ্যে চন্দন দাস, রাজীব ভট্টাচার্য্য ও রিপন দাশ আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
Leave a Reply